সরেজমিন: চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে কীভাবে জড়ো হলো হাজারো মানুষ?
সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দুই দেশের হাজারো মানুষের উপস্থিতি এবং মুখোমুখী অবস্থানের ঘটনায় সীমান্তে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার চেষ্টা করায় সীমান্ত এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
১৮ জানুয়ারি কিরনগঞ্জ সীমান্তে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। বাংলাদেশ অংশে বিজিবির তথ্যমতে, প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ জড়ো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিএসএফ টিয়ার শেল এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
স্থানীয়রা জানান, বিএসএফ শূন্যরেখায় বেড়া নির্মাণের উদ্যোগ নেয়, যা আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন বলে তারা দাবি করেন। কালীগঞ্জ গ্রামের একজন বলেন, “১৫ বছর ধরে বিএসএফ আমাদের কৃষকদের হয়রানি করছে। এবার তারা সরাসরি আমাদের ক্ষতি করতে এসেছে।”
গ্রামবাসীরা জানান, মসজিদের মাইকিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে সীমান্তে জড়ো হতে বলা হয়। আশপাশের গ্রাম এবং দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ লাঠি, সোঁটা এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সীমান্তে জড়ো হন।
ভারতের মালদহ জেলার সুখদেবপুরের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, সীমান্তে তাদের জমি ও ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এক পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, “আমাদের গরু-মহিষ পর্যন্ত চুরি হয়ে যায়। তারকাঁটার বেড়া না হলে আমাদের নিরাপত্তা নেই।”
সাবেক কূটনীতিক এম হুমায়ুন কবির বলেন, “সীমান্তে সাধারণ মানুষের এভাবে মুখোমুখি হওয়া অত্যন্ত বিপদজনক। এটি বড় ধরনের কূটনৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে। দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে উদ্যোগ নেয়া জরুরি।”
ঘটনার পর সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের টহল জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণের গতিবিধি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।