শেখ হাসিনার আমলে বছরে পাচার গড়ে ১.৯ ট্রিলিয়ন টাকা: শ্বেতপত্র
শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রতি বছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার (১.৯ ট্রিলিয়ন টাকা) বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে বলে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনীতি নিয়ে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রবিবার প্রতিবেদনটি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এটি হস্তান্তর করেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলের “দুর্নীতি, লুণ্ঠন ও আর্থিক কারচুপির ভয়ংকর চিত্র” এতে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি “ডিসেকশন অফ এ ডেভেলপমেন্ট ন্যারেটিভ” শিরোনামে জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেন, “গরিব মানুষের রক্ত-ঘামে অর্জিত অর্থের লুটপাটের ভয়াবহতা এই প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়েছে। এটিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্যবেক্ষণকারী বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।”
২৯টি বড় প্রকল্প পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এগুলোর মোট ব্যয় ৮৭ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১০.৪ ট্রিলিয়ন টাকা। ৭টি প্রকল্পের ব্যয় ৭০% পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অধ্যাপক এ কে এনামুল হকের মতে, এডিপিতে ১৫ বছরে ৭ ট্রিলিয়ন টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে, যার ৪০% আমলারা লুটপাট করেছেন।
সদস্য ম তামিম জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার (৩.৫ ট্রিলিয়ন টাকা) বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর ১০% অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে ধরা হলে, পরিমাণ দাঁড়ায় কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন ডলার (৩৫৬ বিলিয়ন টাকা)।
মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, “কর অব্যাহতি কমিয়ে আনা গেলে শিক্ষা বাজেট দ্বিগুণ এবং স্বাস্থ্য বাজেট তিনগুণ করা সম্ভব ছিল।”
প্রতিবেদন জমার সময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন সাথী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ।