যমুনার চরে জুলহাসের উড়োজাহাজ উড্ডয়ন: স্বপ্ন যখন বাস্তবতা
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর কঠোর পরিশ্রম দিয়ে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন মানিকগঞ্জের চরাঞ্চলের তরুণ জুলহাস মোল্লা। নিজের তৈরি উড়োজাহাজ সফলভাবে আকাশে উড়িয়ে তাক লাগিয়েছেন সবাইকে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে শিবালয় উপজেলার যমুনার চরে জুলহাস মোল্লার তৈরি উড়োজাহাজ আকাশে উড়তে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে এ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
জুলহাসের জন্ম দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায়। তবে নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যায় তাদের বসতবাড়ি। এরপর পরিবার নিয়ে আশ্রয় নেন শিবালয় উপজেলার ষাটঘড় তেওতা এলাকায়। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পঞ্চম জুলহাস এসএসসি পাসের পর টাকার অভাবে পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য হন। এরপর জীবিকার তাগিদে ঢাকায় গিয়ে ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ শুরু করেন।
কিন্তু তার মনে ছিল ভিন্ন স্বপ্ন। প্রথমে রিমোট-কন্ট্রোল উড়োজাহাজ তৈরি করে আকাশে ওড়ানোর পরই বড় উড়োজাহাজ তৈরির স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। এরপর দীর্ঘ তিন বছর গবেষণা এবং এক বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের পর স্বপ্নের উড়োজাহাজ তৈরি করেন তিনি।
নিজের তৈরি উড়োজাহাজে পাইলট হিসেবে আকাশে ওড়েন জুলহাস। শিবালয়ের যমুনার চরে তার উড়োজাহাজ প্রায় ৫০ ফুট ওপরে উঠতে সক্ষম হয়। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার সফল বাস্তবায়ন দেখে উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী।
জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “জুলহাসের উদ্ভাবনী চিন্তা ও পরিশ্রম সত্যিই প্রশংসনীয়। সরকার তার গবেষণায় সহযোগিতা করবে, ইতোমধ্যে প্রাথমিক আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।”
নিজের এই সফলতা নিয়ে জুলহাস বলেন, “চার বছরের পরিশ্রমের পর অবশেষে নিজের তৈরি উড়োজাহাজে নিজেই উড়তে পেরেছি। এটি আমার স্বপ্নের বাস্তবায়ন।” জুলহাসের এই অসাধারণ সাফল্য প্রমাণ করে, কঠোর পরিশ্রম ও অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকলে অসম্ভব কিছুই নয়।