নাগরিক অধিকার

বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের বুড়িমারী শাখা অবৈধ বললো শ্রম অধিদপ্তর

বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ বুড়িমারী শাখাকে অবৈধ বলে জানিয়েছে শ্রম অধিদপ্তর। রবিবার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল আজিম স্বাক্ষরিত পত্রে জানান, বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ (রেজিঃ নং-বি-২১৪৭) এর বিদ্যমান গঠনতন্ত্রে শাখা কমিটি প্রণয়নের বিষয়ে কোন বিধান নেই।

জানা যায়, বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন সরদার ও সাধারণ সম্পাদক মো. আজাদ হোসেন কর্তৃক গত ১০ মে মো. সাজ্জাদ হোসেনকে সভাপতি ও মো. আনোয়ার হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে প্রদানকৃত বুড়িমারী শাখা কমিটি গঠন করা হয়। যা শ্রম আইন ও সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রণয়নের কোন বিধান পরীপন্থী।

আরও জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ বুড়িমারী শাখা কমিটিকে কেন্দ্র করে দেশের ২য় বৃহত্তম স্থলবন্দর বুড়িমারীতে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষিতে গত ২০ আগস্ট ২০২৩ সাংবাদিক মো. মনিরুজ্জামান মনির বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ গঠনতন্ত্র ও শ্রম আইন অনুযায়ী বুড়িমারী শাখা কমিটি দিতে পারে কি না এ বিষয়ে তথ্য প্রাপ্তির ‘ক’ ফরমে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে আবেদন করেন। তারই প্রেক্ষিতে শ্রম অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল আজিম স্বাক্ষরিত এক পত্রে বিষয়টি পরিস্কার করেন।

উল্লেখ্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর স্থলবন্দর লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলাস্থ বুড়িমারী ইউনিয়নে অবস্থিত বুড়িমারী স্থলবন্দর। বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শ্রম দপ্তর কতৃর্ক তিনটি শ্রমিক ইউনিয়ন (১) বুড়িমারী স্থলবন্দর ও স্টেশন কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং রাজ-১৪৩৮, (২) বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং রং-০২ ও (৩) বুড়িমারী স্থলবন্দর লোড আনলোড লেবার ইউনিয়ন রেজিঃ নং-রং-০৩ নিবন্ধন প্রাপ্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ৪২নং আইনের ২০২(২) ধারা অনুযায়ী বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিকদের যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। শ্রম আইন অনুযায়ী বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকদের সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ট্রেড ইউনিয়ন’ই স্থানীয় প্রতিনিধিত্বকারী। বুড়িমারী স্থল বন্দরের কোন শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ এর কোন ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন বা জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন এর অন্তর্ভুক্ত নয়। শ্রম আইনের ২০৩ (২) ধারা অনুযায়ী কোন ফেডারেশন কেবলমাত্র সেই প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করিবে, যে প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে উহার কোন সদস্য ট্রেড ইউনিয়ন যৌথ দরকষাকষি হিসাবে আছে। শ্রম আইন মতে নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়া কোন ব্যক্তি কখনোই কোন ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সদস্য হতে পারে না। যেহেতু বুড়িমারী স্থলবন্দরের কোন ট্রেড ইউনিয়ন বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের অন্তর্ভুক্ত বা সদস্য নয় তাই স্বাভাবিক কারণে বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ শ্রম আইন মোতাবেক বুড়িমারী স্থলবন্দরে যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে পারে না।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ বুড়িমারী শাখা কমিটির কারণে যেকোন সময় বুড়িমারী স্থলবন্দরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। এ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রম আইন লংঘন করে বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রভাব বিস্তার করতে দীর্ঘদিন যাবত প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তাই অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বুড়িমারীর সাধারণ শ্রমিকরা।