নাগরিক অধিকার

বাংলাদেশে শিশু ধর্ষণ-যৌন সহিংসতায় ইউনিসেফের উদ্বেগ

বাংলাদেশে শিশুদের ওপর যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে ইউনিসেফ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স এক বিবৃতিতে বলেছেন, “বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহে শিশুদের ওপর বিশেষ করে কন্যাশিশুদের ওপর যৌন সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অত্যন্ত আতঙ্কজনক।”

শিশুরা যেসব জায়গায় নিরাপদ থাকার কথা, সেখানেই তারা সহিংসতার শিকার হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। মাগুরার আট বছরের শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, “এটি আমাদের ভয়ঙ্করভাবে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, বাংলাদেশে শিশুরা কীভাবে মৌলিক অধিকার ও নিরাপত্তার গুরুতর লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছে।”

ইউনিসেফের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত সময়ে সংবাদমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রায় ৫০টি শিশু ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এমনকি ১০ মার্চ একদিনেই সাতটি শিশুর মৃত্যু এবং ছয়টি সহিংসতার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

ইউনিসেফ অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার সরকারি নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে এবং ধর্ষণকে তার প্রকৃত নামে সম্বোধনের ওপর জোর দিয়েছে। পাশাপাশি, সরকারের ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।

শিশুদের সুরক্ষায় সরকারকে বিশেষায়িত শিশু সুরক্ষা ইউনিট প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটি বলেছে, এই ইউনিটের সদস্যদের মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত শিশুদের সঙ্গে সংবেদনশীল আচরণ এবং পেশাদার তদন্ত পরিচালনার প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। একইসঙ্গে, শিশুদের জন্য নিরাপদ সমাজ গঠনে সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা জরুরি।

শিশুবিবাহসহ শিশুদের ওপর যে কোনো ধরনের সহিংসতা রোধে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রতিটি শিশুর নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে ওঠার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ইউনিসেফের মতে, সহিংসতার শিকার শিশুদের দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত এবং এ ক্ষেত্রে কোনো আপস চলবে না।

বাংলাদেশের শিশু সুরক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করতে ইউনিসেফ প্রস্তুত রয়েছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।