নাগরিক অধিকার

পানিফল চাষে খরচ কম, লাভ বেশি

এক সময় নাটোরের গ্রামাঞ্চলের জলমগ্ন জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকত, যেখানে বর্ষাকালে ছাড়া আর কোনো সময় চাষ হত না। তবে বর্তমানে এই পতিত জলমগ্ন জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে পানিফল, যা কৃষকদের জন্য আর্থিকভাবে লাভজনক হয়ে উঠেছে।

এই জমিগুলোতে পানিফল চাষের পাশাপাশি দেশি প্রজাতির মাছও প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ পানিফল চাষের সঙ্গে মাছ চাষও করছেন, ফলে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে এবং কৃষির সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কোনো জমিই পতিত রাখা যাবে না। সময়োপযোগী ফসল চাষের মাধ্যমে জমিগুলোর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

এ বছর নাটোর জেলার জলমগ্ন ১০ হেক্টর জমিতে পানিফল চাষ হয়েছে। বিশেষত সদর উপজেলা, নলডাঙ্গা, সিংড়া ও গুরদাসপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পানিফল চাষ হচ্ছে। এ চাষে ফলন ভালো এবং খরচ কম, ফলে প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২৫ মণ ফলন হয়, যা কৃষকদের জন্য লাভজনক। পানিফল বিক্রির দাম গ্রাম এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি এবং শহর এলাকায় ৮০ টাকা কেজি।

কৃষকরা জানাচ্ছেন, পানি জমে থাকা জমিতে পানিফল চাষে খরচ কম এবং লাভ বেশি। যেমন, এক কৃষক জানান, পানিফল চাষে বিঘা প্রতি লাভ হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। পানিফল চাষে শ্রমিকের তেমন প্রয়োজন হয় না, ফলে কাজের খরচও কম।

সিংড়া উপজেলার কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে পানিফল চাষ করে আসছেন এবং তারা জানিয়েছে, শীতের শুরুতে পানিফলের চাহিদা বেশি থাকে। বর্তমানে পানিফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে অনেক কৃষক স্বাবলম্বী হয়েছেন।

কৃষি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, পানিফল একটি স্বল্প মেয়াদি অর্থকরী ফসল, যার বাজারে চাহিদা বেশ এবং এটি মানুষের পানি শূন্যতা দূর করতে সহায়ক। কৃষকদের উৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।