নাগরিক অধিকার

নোয়াখালীতে মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ: আহত ১০

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় একটি মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে একদল লোক এ হামলা চালায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও মাজারের মোতাওয়াল্লি। হামলাকারীরা ওরশের প্যান্ডেলসহ পুরো মাজার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।

খবর পেয়ে নোয়াখালী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), সুধারাম থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কালাদরাপ ইউনিয়নের মুন্সীরতালুক গ্রামে শাহ সুফি আইউব আলী দরবেশের মাজারে তিন দিনব্যাপী ওরশ আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল। একইদিন বিকালে মাজারের পাশে সোলেমান মার্কেট এলাকায় ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে ওয়াজ মাহফিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ নিয়ে সকাল থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বেলা ৩টার দিকে কয়েকশ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মাজারে হামলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। এতে নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

মাজারের প্রধান মোতাওয়াল্লি মো. জামাল উদ্দিন আল মাইজভাণ্ডারী জানান, ৬৫ বছর ধরে বার্ষিক ওরশ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছরও ২০-২২ ফেব্রুয়ারি ওরশের আয়োজন করা হয়। তার অভিযোগ, স্থানীয় কিছু ব্যক্তি মাজারবিরোধী মনোভাব নিয়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করে হামলা চালিয়েছে।

খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় মান্দারতলী হেদায়েত নূর জামে মসজিদের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি এখন কথা বলতে পারছি না। তবে তৌহিদী জনতা মাজারে ‘বেদাত কাজ’ হয় বলে হামলা চালিয়েছে। পরে কথা বলব।” এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।

সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ নেওয়াজ তানভীর বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পৌঁছার আগেই হামলা হয়। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

সুধারাম মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, “অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”