টাকা পাচার বন্ধে ব্যাংক রেজোল্যুশন অধ্যাদেশ পাস করেছে অন্তর্বর্তী সরকার
দেশ থেকে টাকা পাচার রোধে এবং ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘ব্যাংক রেজোল্যুশন অধ্যাদেশ’ পাস করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, “একটি শিল্পগোষ্ঠী কীভাবে একাধিক ব্যাংকের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে, তা ঠেকাতেই এ অধ্যাদেশ। এখন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা এবং হস্তক্ষেপের পরিধি স্পষ্ট করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম আর না ঘটে এবং আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা পায়।”
সভায় আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশ চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। এর মধ্যে রয়েছে:
সরকারি হিসাব-নিরীক্ষা অধ্যাদেশ: আন্তর্জাতিক অডিটিং স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী হিসাব নিরীক্ষা নিশ্চিত করা।
রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ: নীতিনির্ধারণ এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা পৃথক করা।
গ্রামীণ ব্যাংক সংশোধন অধ্যাদেশ: বিত্তহীনদের অন্তর্ভুক্তি, শহরাঞ্চলীয় এলাকাগুলোর অন্তর্ভুক্তি এবং বেনিফিশিয়ারিদের মাধ্যমে পরিচালনা বোর্ড গঠন সংক্রান্ত বিধান সংশোধন।
রিজওয়ানা হাসান জানান, “অর্থনৈতিক অপরাধে জড়িতদের বিচারের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে এবং আইনি কাঠামো শক্তিশালী করে ভবিষ্যতে দুর্বলতা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
এছাড়া, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের মালিকানার অনুপাতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে—আগে যেখানে বেনিফিশিয়ারিরা ছিল ৭৫ শতাংশ, এখন তারা থাকবে ৯০ শতাংশ মালিকানায়। এটি গ্রামীণ ব্যাংককে পুনরায় জনস্বার্থে পরিচালিত একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলবে বলে জানান উপদেষ্টা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “সাত-আটটি ব্যাংকের মালিকানা নামে-বেনামে দখলের যে প্রবণতা ছিল, তা ঠেকাতেই বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দিষ্ট কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত বিধিমালায় স্পষ্ট করা হবে।”