নাগরিক অধিকার

আ.লীগের অতীত কর্মকাণ্ডের দায় নিতে চায় না ১৪ দল শরিকরা

আওয়ামী লীগের একক সিদ্ধান্ত ও অতীত কর্মকাণ্ডের দায় নিতে চায় না দলটির নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো। ভবিষ্যতে এই জোটে থাকবে কিনা, এই প্রশ্নটি উঠে এসেছে। কিছু শরিক দলের নেতাকর্মীরা এখনই জোট থেকে বেরিয়ে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন।

৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটেছে। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের শরিকদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসে। আড়াই মাস পার হওয়ার পরও এই দলগুলোর নেতাকর্মীদের আতঙ্ক কাটছে না; ফলে দলগুলো স্থবির হয়ে পড়েছে।

২০০৫ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কয়েকটি বাম ও গণতান্ত্রিক দল নিয়ে ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয়। ২৩ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে একসঙ্গে আন্দোলন, নির্বাচন ও সরকার গঠন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৪ দল পথচলা শুরু করে। তবে গত কয়েক বছর ধরে ১৪ দলের শরিকরা অভিযোগ করে আসছেন যে, আওয়ামী লীগ সেই শর্ত বাস্তবায়ন করেনি এবং একক সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে।

৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই জোটের দলগুলোর ওপর বিপর্যয় নেমে আসে, যার জন্য তারা আওয়ামী লীগকে দায়ী করছে। তারা এখন ভাবছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে দলে যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে না পারলে দল টিকিয়ে রাখা যাবে না।

ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, ন্যাপসহ কয়েকটি দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ১৪ দল নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তারা মনে করছেন, আওয়ামী লীগ জোট শরিকদেরকে অন্য চোখে দেখেছে এবং তাদের পরামর্শ নেয়নি। এই অবস্থার জন্য আওয়ামী লীগ এককভাবে দায়ী। তবে কিছু কেন্দ্রীয় নেতা নেতিবাচক সিদ্ধান্তে না যাওয়ার পক্ষে। তাদের মতে, পার্টির প্রধান নেতা রাশেদ খান মেননের মুক্তির জন্য জোটে থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

জাসদের নেতাকর্মীরাও ১৪ দল থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে। তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ একক সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে, যা তাদের সঙ্গে জোটে থাকার সম্ভাবনা কমিয়ে দিচ্ছে।

ন্যাপের নেতারাও ১৪ দলীয় জোট নিয়ে দ্বিমত পোষণ করছেন। আগামীতে এই জোটে অগ্রসর হতে গেলে আওয়ামী লীগের ভূমিকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে।

অপর এক নেতার মন্তব্য, “আওয়ামী লীগ নিজের মতো করে চলেছে, সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সরকারের পরিচালনায় দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছে। এই অবস্থায় আমাদের পক্ষে জোটে থাকা সম্ভব নয়।”